প্রত্যয় নিউজ ডেস্কঃ ১৯৭১ সালে যুদ্ধের ডামাডোলে বন্ধ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অর্ধশতক পর আবারো সংকটে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। যুদ্ধের পর পরীক্ষা ছাড়াই অটো প্রমোশনে শিক্ষার্থীরা শুরু করেন থেমে যাওয়া শিক্ষা জীবন।
মহামারির প্রেক্ষাপটে একের পর এক বন্ধ হচ্ছে এ বছরের পাবলিক পরীক্ষা। অনিশ্চয়তার মুখোমুখি দেশের কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ। ঠিক এমনই এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কোনোমতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণা দিলেও কাজ হয়নি তাতে। পরের শ্রেণিতে পরীক্ষা ছাড়াই উত্তীর্ণ হয়েছিল স্বাধীন দেশের শিক্ষার্থীরা।
৭১ এর উত্তাল সময়। দেশ স্বাধীন করার মরণপণ লড়াইয়ে যুদ্ধের দামামা তখন পূর্ব-পাকিস্তান জুড়ে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে মার্চের পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। ইতিহাস বলে, সে সময় বাঁচার আশায় সাড়ে ৭ কোটি জনগণের মধ্যে ১ কোটিরও বেশি মানুষ শরণার্থী হয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন ভারতের মাটিতে। কামান-গোলা-বারুদে প্রকম্পিত পরিবেশে যারা দেশে ছিলেন তারাও ছিটকে পড়েন শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ থেকে।
যুদ্ধের মধ্যেই ৭১ এর পহেলা জুন স্বাভাবিকতার দোহাই দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার অযাচিত নির্দেশ দেয় তৎকালীন শাসকরা। শুধু তাই নয়, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠান খোলারও তোড়জোড় করা হয়েছিল। এমনকি শান্তি কমিটির সদস্যরাও পাড়ায় পাড়ায় শাসিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠাতে চেয়েছিল ধ্বংসস্তূপের বিদ্যাপীঠে। পরবর্তীতে সফল হয়নি জান্তা সরকার। যুদ্ধের পর পরীক্ষা ছাড়াই অটো প্রমোশনে শিক্ষার্থীরা শুরু করেন থেমে যাওয়া শিক্ষা জীবন।
অর্ধশতক পেরিয়ে আজ আবারও শিক্ষার্থীরা তেমনি এক সংকটে। এ বছর অদৃশ্য ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত বন্ধই রয়েছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। একের পর এক পরীক্ষা বাতিল। আর দফায় দফায় স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব বন্ধের অনিশ্চয়তায় এবারেও সেই অটো প্রমোশনই কী বরণ করতে হবে শিক্ষার্থীদের? নীতিনির্ধারকদের পরিকল্পনা আর মহামারির চলমান বাস্তবতাই বলে দেবে কোন দিকে যাবে দেশ।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন